গাজীপুরে দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা; গ্রেফতার ২।
বি এ রায়হান, গাজীপুর:
গাজীপুর মহনগরের গাছা অঞ্চল থেকে পরপর দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
শিশু নিহাদের মরদেহ ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপর শিশু রুবার লাশ উদ্ধারে তুরাগ নদের শাখা স্থানীয় বালু নদীতে উদ্ধার অভিযান চলছে।
রবিবার জিএমপি গাছা থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে দুটি অপহরণ ঘটনার বর্ণনা গণমাধ্যমে তুলে ধরে পুলিশ।
অপহরণে জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার আলী আকবর ও গাজীপুরের দক্ষিণ খাইলকুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মোঃ ইলতুৎ মিশ জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টার দিকে তিন বছরের ছেলে শিশু নিহাদ অপহরণ হয়। নিহাদের মা নার্গিস স্থানীয় একটি পোষাক কারখানায় চাকরি করেন। ঘটনার সময় নিহাদ ওই কারখানার গেটে খেলা করছিল। এসময় সেখান থেকে অপরণের শিকার হয়। এ ঘটনায় অপহৃত শিশুর বাবা গার্মেন্টস শ্রমিক হানিফ আলী গাছা থানায় মামলা দায়ের করলে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ। ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অপহরনকারীকে দেখা গেলেও তাকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। অপহরণের তিন দিন পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শ্যামপুর এলাকায় একটি ভবনের পানির ট্যাংকির ভেতর থেকে নিহাদের লাশ উদ্ধার করে শ্যামপুর থানা পুলিশ।
এদিকে গত ৯ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় গাছা থানাধীন পূর্ব কলমেশ্বর থেকে সুমাইয়া আক্তার সুমু ওরফে রুবা নামে দুই বছর আট মাসের শিশু অপহৃত হয়। অপহরণকারীরা শিশু রুবার বাবার কাছে মোবাইল ফোনে ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবী করে। এ ঘটনায়ও গাছা থানায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের হলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারী চক্রের সদস্য আলী আকবরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আলী আকবরের দেয়া তথ্য মতে তার খালাতো ভাই আনোয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা দুটি অপহরণের দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। শিশু রুবা ও নিহাদের হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তারা দুটি শিশুর জামা-কাপড়ের সন্ধান দেয়। শিশু দুটির পরিবারকে এসব জামা-কাপড় দেখিয়ে তারা মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করছিল বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।
তিনি আরও জানান, শিশু রুবার মরদেহ এখনো খোঁজে পাওয়া যায়নি । মরদেহ উদ্ধারে দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় বালু নদীতে তল্লাশি অভিযান চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপ সহকারী পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মোঃ হাসিবুল আলম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (গাছা জোন) মোঃ আহসানুল হক, গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেন।